নান্দাইল প্রতিনিধি
মাত্র বাকী দুই মাস। পরে হবে বার্ষিক পরীক্ষা। কিন্তু এখনো ১৭১ শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছায়নি পাঁচ বিষয়ের পাঠ্যবই। টেনেটুনে কোনোমতে চলছে ক্লাস। এতে শ্রেণিপাঠে মনোযোগ হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বই না পেয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিয়মিত মাদরাসায় আসছে না। এমন ঘটনা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কাদিরাবাদ আলিম মাদরাসায়।
১৭ জন শিক্ষক থাকলেও তার বিপরীতে প্রায় প্রতিদিনি উপস্থিত ছিল থাকে ১০ ্ষ্ঠএর নিচে শিক্ষার্থী। অন্যদিকে, আলিম শ্রেণিতে পড়ুয়ারা আসতেই চায় না। বিশেষ করে অনেক পাঠ্যবই না থাকায় ইচ্ছে করেই বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ক্লাসে আসছে না। শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের বার্ষিক পরীক্ষার আর রয়েছে মাত্র দুই মাস। কিন্তু তারা এখনো আরবি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, আকাইদ, ইসলামের ইতিহাস ও বাংলা ব্যাকরণের পাঠ্যবই পায়নি। বারবার বলার পরেও মাদরাসার অধ্যক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেননি। অথচ শ্রেণিকক্ষের পাশে অধ্যক্ষের কক্ষে অনেক বই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। অধ্যক্ষের টেবিলের পাদানিতে সারি করে রাখা হয়েছে উদ্ধৃত বই। কিন্তু প্রয়োজনীয় পাঠ্যবইয়ের অভাবে শিক্ষার্থীরা পাঠ নিতে পারছে না। এ বিষয়ে শিক্ষকরা বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছেন না।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম, সাব্বির নাদিমসহ অনেকেই জানায়, সব মাদরাসায় আরবি, আকাইদ ও বাংলা ব্যাকরণ বই থাকলেও তাদের হাতে এসব বই পৌঁছেনি। এতে তারা বাধ্য হয়ে পাশের মাদরাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বই ফটোকপি করে এনে পড়ছে। এতে তাদের মন ভরছে না। তবে সবাই এই কৌশল অবলম্বন করছে না। এখন দুই মাস পর আসছে বার্ষিক পরীক্ষা। তারা কিভাবে পরীক্ষা দেবে তা ভেবে পাচ্ছে না।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হালিমা, হিমা ও খাদিজা জানায়, গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যবই না থাকায় ও ক্লাস না হওয়ায় এখন মাদরাসায় আসতে মন চায় না। পরীক্ষায় ওইসব বিষয়ে কিভাবে পরীক্ষা দেবে তা ভাবিয়ে তুলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল আজিজ জানান, বই নেই এ বিষয়ে তিনি আজকে জেনেছেন। তিনি উপজেলায় খোঁজ নেবেন বলে জানান।
নান্দাইল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘বই তো না পাওয়ার কথা নয়। সব প্রতিষ্ঠানই তো বই পেয়েছে। কেউ তো অভিযোগ করেনি। তারপরও প্রাপ্তি সাপেক্ষে দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’
এ ব্যাপারে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা তো হতে পারে না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 Comments