চরকা রিপোর্ট ঃ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও পরিবহন শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি অবরোধ ও বিক্ষোভের কারণে থমথমে পরিস্থিতি ও অচল হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহ দিঘারকান্দা বাইপাস ঢাকা মহা সড়ক । শুক্রবার রাতে হালুয়ঘাটের উপজেলাএনসিপির প্রধান ও জুলাই যোদ্ধা আবু রায়হান এর সঙ্গে আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আমিনুল হক শামীমের মালিকাধীন ইউনাইটেড পরিবহনের স্টাফদের বাগবিতণ্ডা ও হাত চালাচালি ঘটনা কে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা রাতেই ইউনাইটেড পরিবহন বন্ধ দের দাবি জানালে সকালে শ্রমিকরা পথে নেমে আন্দোলন ও বিক্ষোভ শুরু করলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় । এতে এই মহাসড়কে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা।
একাধিক সূত্র জানায় রাতেই ময়মনসিংহে জুলাই যোদ্ধাদের বাধায় আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীমের মালিকানাধীন ইউনাইটেড পরিবহন বন্ধ করে দেয়। সকালে এর প্রতিবাদে নগরীর শিকারি কান্দা বাইপাসে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ময়মনসিংহ নগরীর শিকারি কান্দা বাইপাসে এই অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে।
এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা।
হালুয়ঘাটের উপজেলাএনসিপির প্রধান ও জুলাই যোদ্ধা আবু রায়হান জানান, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ইউনাইটেড পরিবহনের ঢাকা-মেট্রো-১৪-৫৩৫০ নম্বরের একটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ার সময় গাড়ির স্টাফরা তাকে অমানবিকভাবে মারধর করে ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলার সদস্য সচিব আলী হোসেন বলেন, গেজেটভুক্ত জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় যাওয়ার জন্য মাসকান্দা বাসটার্মিনালে যান। এ সময় তাকে পরিবহন শ্রমিক জুলাইযোদ্ধা বলে টিটকারি দেয়। এ নিয়ে তখন বাগবিতণ্ডা হয়। ঘটনাটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জানতে পেরে আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীমের মালিকাধীন ইউনাইটেড পরিবহন ঢাকা-ময়মনসিংহে চলাচল বন্ধ করে দেয়। এছাড়া তার মালিকানাধীন সব বাস বন্ধের দাবি জানানো হয়।
বক্তব্য জানতে ময়মনসিংহ জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলীর মোবাইল নম্বরে একাধিক কল দিয়েও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে শিকারি কান্দা বাইপাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, গাড়ি বন্ধ করতে হলে সব গাড়ি বন্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র ইউনাইটেড পরিবহন বন্ধের দাবি শ্রমিকরা মানছে না। কারণ এই গাড়িতে কাজ করে অনেকের জীবীকা নির্বাহ হচ্ছে। তাই শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করে সব যানবাহন বন্ধ করে দিয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধারা আমাদের সার্ভিসের কাউন্টার বন্ধ করে শ্রমিকদের আটকে রাখে। পরে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে ছাত্ররা বাস চলাচল করতে না দেওয়ায় শ্রমিকেরা অবরোধ করছে। বিষয়টি দেখছি কীভাবে সমাধান করা যায়।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে আমরা (পুলিশ) ঘটনাস্থলে কাজ করছি। দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।
0 Comments