সাজ্জাদ/ মাসুম
নিজ পিতাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে ময়মনসিংহ কর্মরত এক পুলিশ সদস্য এর বিরুদ্ধে । পুলিশ সদস্য অনিছুর রহমানের বাড়ি ত্রিশালের সতের পাড়া গ্রামে। আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি রুহুল আমিন মাদানীর ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত থাকায় ঐ সব এলাকায় অনিছুর রহমানের ভয়ে কেও কথা বলেনি এতদিন। আনিছুর রহমান পুলিশের প্রভাব এবং এমপি মাদানীর ক্ষমতা দিয়ে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং মোটা অংকের লোনের কথা বলে অনেক পরিবার এবং ব্যবসায়ীদের কে পথে বসে দিয়েছে।
ত্রিশালের ইউনিয়নের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ একাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান পুলিশ সদস্য আনিছুর রহমান (পুলিশ সদস্য কনস্টেবল নম্বর ৯৪, বিপি নম্বর ৮৫০৭১২১০৭১ পিতা মৃত ছোবাহান ত্রিশালের সতের পাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা । মৃত ছোবহানের পিতা মৃত উমেদ আলী ত্রিশালের কোন স্থানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নি ।এবং মৃত ছোবাহানের গেজেট নং ৪৫৭৪ মুক্তিযুদ্ধের নম্বর ০১৬১০০০৭৯৭৮ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয় বলে লিখিত দেন ত্রিশালের ৬ নং ইউনিয়নের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা কামাল । আওয়ামীলীগের সময় স্থানীয় সাংসদের ঘনিষ্ঠ জন হওয়ায় কেও কথা বলেনি এছাড়া অত্র এলাকায় তার ছিল একটি বড় গুন্ডা বাহেনী । কেও কথা বললে পুলিশ দিয়ে ধরে নেওয়া সহ নানারকম হয়রাণী করতো বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । পুলিশ বিভাগে এরকম পুলিশ সদস্য থাকায় পুলিশের ভাবমূর্তি খুন্ন করেছে বলে এলাকাবাসী বলছেন। এই অনিছুর কে এলাকায় সবাই চেনে কোটিপতি আনিছুর রহমান হিসেবে । পুলিশ সদস্য হয়ে কোটি টাকার মালিক কিভাবে হলো এ প্রশ্ন সতের পাড়া গ্রামের মুখে মুখে ।
এলাকাবাসী জানায় পুলিশ সদস্য আনিছুর রহমানের অত্যাচারে শিকার হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি পরিবার । এর মধ্যে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কে পথে বসে দিয়েছে। উপায় না পেয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে বিভিন্ন মহলে।ময়মনসিংহের ত্রিশালে এমন ঘটনাই ঘটেছে। পুলিশ সদস্য হয়েও স্থানীয় এক সাংসদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী দিয়ে মোটা অংকের ব্যাংক লোনের কথা বলে ফাঁদে ফেলে সর্বস্বান্ত করে ফেলতো বলে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে । ক্ষমতার অপব্যবহার করে এখন কোটি টাকার মালিক হেয়েছেন পুলিশ সদস্য আনিছুর রহমান এবং তার স্ত্রী ।তার স্ত্রীর নামেও রয়েছে কোটি টাকা সম্পত্তি । দিনমজুর পিতার সন্তান হয়ে কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন ত্রিশালবাসী জানেন না । এলাকাবাসী এবং ময়মনসিংহের ত্রিশালে সেনাবাহেনীর সাবেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিনের সন্তান মোঃ জাকির হোসেন জানান পুলিশ সদস্য আনিছুর রহমান ত্রিশালের সতের পাড়া গ্রামে ক্ষমতাধর দাদন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত এবং তার স্ত্রীর নামে ত্রিশালে রয়েছে বিশাল সম্পত্তি । লোক জনকে মোটা অংকের লোন দেওয়ার কথা বলে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন কি স্থানীয় সাবেক এক এমপির সহায়তা তার পিতাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশ চাকরি নিয়েছে বলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সহ অনেকে লিখিত অভিযোগ করেছেন। একজন পুলিশ সদস্য গুন্ডা বাহেনী বানিয়ে আওয়ামীলীগ এর সময় তার গ্রাম সহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে মাদক ব্যবসা চালাত বলে অত্র এলাকার লোকজন জানান। তার অত্যাচারের মাত্রা এতটা ভয়ংকর ছিল কেও অভিযোগ করলেও কোন ফলাফল পাওয়া যায় নি । ঐ সময় থানায় জিডি করে ও উল্টো একশ্যান হতো । একজন সাধারণ পুলিশ সদস্য হয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষন্নু করে কিভাবে এত টাকার মালিক হলেন এর জবাব কেও দিতে পারেন নি । একাধিক লোক অভিযোগ করেন আনিছুর রহমান পুলিশ সদস্য হয়ে যে কাজ করেছেন তাতে পুলিশের ভাবমুর্তি অনেকটাই ক্ষুন্ন হয়েছে । সে এলাকার গোন্ডা বাহেনী তৈরি করে যে ভাবে লোকজনকে অত্যাচার করেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না । তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানান।
সেনাবাহেনীর সাবেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন এর সন্তান আশরাফুল আলম সহ আরো অনেকে জানান ত্রিশালের সতের পাড়া গ্রামের মৃত ছোবাহান এর সন্তান পুলিশ সদস্য আনিছুর রহামান (বিপি নং ৮৫০৭১২১০৭১) এর সঙ্গে ছোট ভাই কামরুল ইসলাম পূর্ব থেকে পরিচিত থাকায় মোটা অংকের ব্যাংক লোন করে দিবে বলে ৩ টি করে স্বাক্ষরিত চেক, ৬ টি অলিখিত নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প এবং তার অসুস্থ মাকে গেরেন্টার হিসেবে নেয় পুলিশ সদস্য আনিছুর রহমান এবং বলে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ব্যাংক লোন পাওয়া যা্ব।ে পরবর্তিতে কামরুল কে লোন না করে স্বাক্ষরিত চেক দিয়ে পাল্টা মিথ্যা মামলা করে কামরুলের বৃদ্ধ মাকে জেলে পাঠায় আনিছুর রহমান ।এর পর উল্টো প্রতিদিন তার বয়স্ক মা এবং কামরুল কে মোটা অংকের চাদাঁ দাবি করে। এক পর্যায়ে সেই জুডিসিয়াল স্টাম্পে ভুয়া বায়না দলিল বানিয়ে ৩৬ লক্ষ টাকা পান বলে পুলিশ সদস্য আনিছুর রহামন দাবি করেন । পুলিশ সদস্যে আনিছুর রহমানের স্ত্রীকে দিয়ে আরেকটি মামলা করান ।পুলিশ সদস্যের চাপের প্রেক্ষিতে কামরুলের কাছ থেকে সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার ক্যাশ নেয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ এক লক্ষ টাকা গাছ বিক্রির ৬০ হাজার টাকা আনিছুর রহমান এবং তার স্ত্রী কে দেয়া হয় । বেশী অর্থের আাশায় আরো চাপ মামলা র ভয় দেখানো শুরু করে । বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন বড় সন্তান আশরাফুল ইসলাম আরো জানান আনিছুর রহমান ও তার দলবল নিয়ে সম্প্রতি ছোট ভাই জাকির কে বেদম প্রহার ও মারধর করে এসব দেখে বাবা( বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন) গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্ট্রোক করে ১৭ জুন মধ্যরাতে আমার বাবা মৃত্যু বরণ করেন । আমার পিতার মৃত্যুর কারণ পুলিশ সদস্য আনিছুর রহামান এবং তার স্ত্রী সহ দলবল আমি সুষ্টূ তদন্ত পূর্বক বিচার জানাই । আনিছুর রহমান এলাকায় তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে মাদক ব্যবসা করে বড় সিন্ডিকেট গড়ে তোলে ৫ আগস্টের পর সিন্ডিকেট সদস্যরা পালিয়ে যাবার কারনে অনেকটাই নিস্তেজ হয়ে পড়ে । মেসার্স এসবি ফর্দ , মেসার্স সামাদ ব্রিকস ত্রি স্টার সহ বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা উত্তোলন করতো আনিছুর রহমান ।
এ বিষয়ে এলাকাবসী জানান কোন যোগ্যতাই ছিল এ আনিছুর রহমানের পুলিশ সদস্য হওয়ার । সাবেক এমপি সাহেবের খুব কাছের লোক ছিল চাদাঁবাজি, বাটপারি, মাদক ব্যবসা কি না করতো এই আনিছুর রহামান তার দৃষ্টান্ত শাস্তি চাই । একজন বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী কে ভুয়া মামলা দিয়ে সে জেলে পাঠিয়েছে ।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ সুপার কাজী মোঃ ছোয়াইব জানান পুলিশ কনস্টেবল আনিছুর রহমানের অভিযোগ আমারা পেয়েছি এবং এর তদন্ত চলমান ।
0 Comments