প্রতিদিন চরকা

প্রতিদিন চরকা

ময়মনসিংহে হট্রগোলে ওএমএসের ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত


 


চরকা রিপোর্ট ঃ

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে হট্টগোলের কারণে ময়মনসিংহ মহানগরীতে ওএমএসের ডিলার নিয়োগের লটারি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। সরকারের ভর্তুকিমূল্যে খোলাবাজারে বিক্রির খাদ্যপণ্যের পরিবেশক হওয়ার জন্য বিএনপি-সমর্থিত আবেদনকারীরা এই হট্টগোল করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (২৩ জুলাই) বেলা ১টার দিকে আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক কার্যালয় নগরের তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে ওএমএসের ডিলার নিয়োগের লটারি কার্যক্রমের আয়োজন করে। এতে অংশগ্রহণকারীরা দুপুর ১২টা থেকেই টাউন হলে জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১টার দিকে মঞ্চে বিভাগীয় কমিশনার, আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক, জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকসহ অন্য সরকারি কর্মকর্তারা এলে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিয়ে হট্টগোল শুরু করেন বিএনপি-সমর্থিত আবেদনকারীরা।

সরকারি কর্মকর্তারা লটারির নামে কৌশলে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেনএমন অভিযোগ তুলে তাঁরা বেলা ২টা পর্যন্ত মিলনায়তনের ভেতর বাইরে হট্টগোল করেন। সময় বিভাগীয় কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তারা হট্টগোলকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাতে তাঁরা শান্ত না হওয়ায় লটারি কার্যক্রম স্থগিত করেন।

ওএমএসের ডিলার হওয়ার জন্য আবেদনকারী মাহমুদা আক্তার মলি নামের বিএনপির এক নেত্রী বলেন, ‘ডিলার নিয়োগে বিগত সময় আমরা কোনো লটারি প্রক্রিয়া দেখিনি। বছর কেন লটারির ব্যবস্থা করা হয়েছে, আমরা এর জবাব চাই। লটারির ব্যবস্থা করায় আওয়ামী লীগের দোসর তাদের স্বজনেরা একাধিক আবেদন করেছে। এতে তাদেরই পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এমন লটারি চাই না।

মহানগর বিএনপি নেতা টুটুল ওয়াহিদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের সময় যারা খাদ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতেন, তাঁরাই লটারির আয়োজন করেছেন। এতে বিষয়টি স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগের দোসরেরাই সুযোগ পাবে। এটা প্রশাসনের একটি কৌশল। তাই আমরা হট্টগোল করলে লটারি কার্যক্রম স্থগিত হয়।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের বলেন, ‘হট্টগোলের কারণে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পুরোনো ডিলার যাঁরা আছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরা পণ্য বিক্রি করবেন না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পণ্য বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হবে কি নাএমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল কাদের বলেন, ‘দ্রুত বিষয়টি সমাধান করে নতুন ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে।

বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশের অন্যান্য বিভাগে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হয়েছে। সবশেষ আমরা স্বচ্ছভাবে ডিলার নিয়োগের জন্য লটারির আয়োজন করেছি। এর আগে আওয়ামী লীগের কোনো দোসর যেন আবেদন করতে না পারে, সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু যখন লটারি কার্যক্রম শুরু করব, তখন আবেদনকারীরা হট্টগোল শুরু করেন। তাঁদের থামানোর চেষ্টা করলেও থামেননি। তাই কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছি।

জানা গেছে, ময়মনসিংহ নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ওএমএস ডিলার ছিলেন ৫৩ জন। আগস্টের পর অনুপস্থিত ১৬ জনের ডিলারের নিয়োগ বাতিল করা হয়। ৩৭ জন ডিলার দিয়ে ওএমএসের কার্যক্রম চলছে।

 

প্রভা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক শওকত আলী বলেন, ‘৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে সরকারি চাল, আটা বিক্রি করে আসছি। আমি কোনো দলের সঙ্গে জড়িত নই। কিন্তু আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বর্তমান প্রশাসন আমাদের বাদ দিয়ে লটারির মাধ্যমে নতুন ডিলার নিয়োগের পাঁয়তারা করছে। আমাদের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। এতে সুবিধাভোগীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়বে

Post a Comment

0 Comments