স্টাফরিপোর্টার ঃ “সমাজ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি দূর করতে হলে পুনর্বাসনের মাধ্যমে বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে” এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের বাস্তবায়নে বাস্তবায়িত হলো ব্যতিক্রমধর্মী একটি পুনর্বাসন কার্যক্রম।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার পাঁচজন ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের আওতায় দোকান ও অটোরিকশা প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুনর্বাসন উপকরণসমূহ সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম প্রিন্স। তিনি বলেন, প্রশাসন শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি মানবিক ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। সমাজের প্রান্তিক মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব।
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকারের লক্ষ্য শুধু ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ করা নয়, বরং এসব মানুষকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে এনে সম্মানজনক জীবনের সুযোগ করে দেওয়া। এই ধরণের কর্মসূচি তারই একটি অংশ। ভবিষ্যতে আরও বেশি মানুষকে এই কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দা তামান্না হুরায়রা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিকা পারভীন, উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোবায়রা বেগম সাথী সহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
পুনর্বাসনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ দোকান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও অবকাঠামো সহ দোকানঘর পেয়েছেন, আবার কেউ পেয়েছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, যা দিয়ে তারা নিজে চালিয়ে আয় করতে পারবেন।
এই কার্যক্রমে সুবিধাভোগীরা আবেগ আপ্লুত হয়ে জানান, আগে তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে হাত পাততেন, যা ছিল অপমানজনক ও কষ্টদায়ক। এখন তারা নিজের আয় দিয়ে সম্মানের সঙ্গে জীবন কাটাতে পারবেন এই আত্মবিশ্বাসে ভরপুর তারা।
এটি শুধু একটি পুনর্বাসন কার্যক্রম নয়, এটি সমাজের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। স্থানীয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগ সমাজে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।
0 Comments