সাল টা ২০০৪ । আমি দৈনিক জাহানে সাংবাদিকতা হিসেবে কাজ শুরু করি ফ্লিম ক্যামরা নিয়ে দৌড়ঝাপ পাড়ি । এক সময় মৃতঞ্জয় রোডে জরাজীর্ণ অবস্থায় লোহার মেশিন টি দেখতে পাই লোকজনের কাছে প্রশ্ন করতেই বলে এটি একটি প্রেস পাঁচবাগ মৌলানা সাহেবের এখান থেকে তিনি বুলেটিন প্রকাশ করতেন এখন পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে আছে । তবে উনার অনেক আধ্যাত্মিক শক্তি থাকায় প্রেসের সম্মুখে যায় না গেলেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাই ভয়ে কেও ধরে না এভাবেই আছে। মনে আরো কৌতুহল জাগে । অনেক লেখা লেখির পর কোন কাজ না হওয়ায় অধ্যাপক স্বপন ধর স্যার কে এ বিষয় টি বলতেই তিনি বললেন এ বিষয়েগুলো সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে গঠন করা হচ্ছে পূরাকৃর্তি সংরক্ষণ কমিটি । এ কমিটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ঠদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং পূরাকৃর্তি সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব ইমতিয়াজ হোসের অন্যান্য সদস্যদের প্রচেষ্ঠায় প্রচার প্রচরাণা চালিয়ে গত ৩০ আগস্ট ২০২৫ মুদ্রন যন্ত্র টি জাদুঘরে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হলো । মেশিনটির গায়ে একটি নম্বর প্লেট লাগানো আছে। তাতে মেশিনের নম্বর হিসেবে ৫৫৯১ লিখা রয়েছে। নম্বরটি ইংরেজীতে লিখা ৫৫৯১। এই প্লেটটি উল্টে ধরলে ১৬৯৯ মনে হয়। যেহেতু যন্ত্রটি হলো একটি H.S. Cropper & Co. ÒCropperÓ” প্ল্যাটেন প্রিন্টিং প্রেস। এটি মূলত ইংল্যান্ডের নটিংহ্যাম (ঘড়ঃঃরহমযধস) শহরের (Nottingham) kn‡ii H.S. Cropper & Co একটি কোম্পানি তৈরি করেছিল। তবে ময়মনসিংহে কত সালে এ প্রেস টি এখানে আনা হয়েছিল তা নিয়ে আছে বিভ্রান্তি । এ প্রেস টির স্বত্তাধিকারী মাওলানা শামছুল হুদা পাঁচবাগী (র.) । তিনি ময়মনসিংহে দাপটের সঙ্গে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় ছিলেন সেই হিসেবে তিনি ১৯৩০ সালের দিকে এ প্রেস টি স্থাপন করেছিলেন । যদিও প্রেস টি ১৮৬০-এর দশক থেকে ১৮৯০-এর দশক পর্যন্ত উৎপাদিত হতো । তবে মুদ্রণ যন্ত্র টি জানার আগে মাওলানা শামছুল হুদা পাঁচবাগী (র.) সম্পর্কে জানা প্রয়োজন বলে মনে করি ।
মাওলানা শামছুল হুদা পাঁচবাগী (র.) ইংরেজি ১৮৯৭ সাল, বাংলা ১৩০৩ সালের ফাল্গুন মাসে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার লংগাইয়ের মাইজবাড়ি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মৌলভী ক্বারী মোঃ রিয়াজ উদ্দিন,পীরে কামেল ও মোকাম্মেল হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন, তিনি ছিলেন ভারতের বিখ্যাত আলেম রশীদ আহমদ গঙ্গুহী(র.)'র খলিফা। তাঁর কেরামতি আজও গফরগাঁওয়ে মানুষের কাছে রূপকথার মত কাহিনী হয়ে আছে। একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল-তাঁর ঘোড়া সুদখোর ও বেনামাজির খাবার খেত না বলে অনেকে জানান। অন্যদিকে তাঁর মাতা মোছাঃ উম্মে কুলসুম ছিলেন ধার্মিক ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানসম্পন্না আল্লাহ্ওয়ালী। মৌলভী মোঃ রিয়াজ উদ্দিন সাহেব ইংরেজ জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। নিজেকে জড়িয়ে ছিলেন ৩/৪ টি মামলায়। পাঁচভাগী সাহেবের জন্মের কয়েক বৎসর পর মৌলবি রিয়াজ উদ্দিন সাহেব মাইজবাড়ির সমন্ত সম্পত্তি নিজেগড়া মাদ্রাসা, মসজিদে ওয়াকফ দিয়ে পাঁঁচবাগে চলে আসেন। উল্লেখ্য যে গ্রামটিতে পাঁচটি জমিদারের অংশ বা হিস্যা বিদ্যমান ছিল। সে কারণেই গ্রামটির নাম হয়েছিল পাঁচবাগ।(পাঁচভাগ নয়)। মাওলানা শামছুল হুদা(র.) শিশুকাল থেকেই ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী ও মেধাবী। তাঁর নামের অর্থ হেদায়তের সূর্য।সূর্যের মত তিনিও আলোকিত করেছিলেন ভারত উপমাহাদেশের সমন্ত মানুষকে। তাঁর জ্ঞানের আলোতে অগণিত মানুষ হেদায়েত প্রাপ্ত হয়ে সঠিক পথের সন্ধান পেয়েছিলেন। তাঁর কাছ থেকে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সকল মানুষ উপকৃত হতেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে ফাজেল পরিক্ষায় মাদ্রাসা বোর্ডে সমন্ত ভারত উপমহাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক লাভ করেন। তবে ইংরেজ মহিলার হাত থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করতে হবে জানতে পেরে অনুষ্ঠান বর্জন করেছিলেন এবং স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন নাই। এরপর ভারতের রামপুর স্টেট মাদ্রাসায় ভর্তি হতে গেলে শিক্ষকরা তার সম্পর্কে জেনে বলেন তোমার এখানে ভর্তি হয়ে কোনো লাভ হবে না, তুমি শিক্ষকদের চেয়ে বেশি জ্ঞান রাখো। তারপর বিখ্যাত আলেম, ইসলামী চিন্তাাবিদ ও দার্শনিক হযরত মাওলানা আব্দুল আজীজ সাহানাপুরী সাহেবের সান্নিধ্যে ৩০ বৎসরের পাঠ্য মাত্র ৩০ দিনে সম্পন্ন করেন। দার্শনিকও হয়েছিলেন আশ্চর্যান্বিত। জানা যায় দার্শনিক সপ্তাহে মাত্র এক দিন মাদ্রাসার শিক্ষকমন্ডলী ও যোগ্য ছাত্রদের একত্রে একটি ক্লাস নিতেন। বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এবং নাম করা শিক্ষকগণ দর্শন শাস্ত্রে জ্ঞান লাভের আশায় এখানে যেত। বালক শামছুল হুদা(র.)কে দেখে দার্শনিক বলেছিলেন তুমি অনেক ছোট লেখাপড়া শেষ করে পরে আমার কাছে এসো। শামছুল হুদা(র.)সুযোগ প্রার্থনা করলেন। দার্শনিক বিরক্ত হয়ে দর্শন শাস্ত্রের একটি বই হাতে দিয়ে বললেন এটা পড়াশেষ করে আরো কিছুকাল পরে এসো। মাওলানা সাহেব বইটি হাতে নিয়ে বাসায় চলে আসলেন। আশ্চর্যজনক ব্যাপার মাওলানা সাহেব হাতে বই নিয়ে পরদিন দার্শনিকের সামনে হাজির। দার্শনিক তাঁকে দেখে বিরক্ত সহকারে বললেন- আমি আগেই বলেছিলাম তুমি ছেলে মানুষ এগুলো বুঝার বয়স তোমার হয়নি। শামসুল হুদা (র.) বললেন হুজুর আমি পড়ে শেষ করে জেনে বুঝেই এসেছি। দার্শনিক রাগান্বিত হয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে শুরু করলেন, মাওলানা সাহেব অত্যন্ত চমৎকার ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দার্শনিক কে অবাক করে দেন। দার্শনিক আবার তাঁর হাতে আরেকটি বই দিয়ে পড়ে শেষ করে আসতে বললেন। মাওলানা সাহেব পরের দিন আবার এসে হাজির। দার্শনিক সাহেব প্রশ্ন করার আর সাহস পাননি, মাওলানা সাহেবের জ্ঞানের গভীরতায় শ্রদ্ধায় উনার মাথা নত হয়ে আসে। দার্শনিক আবার আরেকটি বই দেন এভাবে ২৯ তম দিনে একটি বই দিয়ে বললেন এই বইটা খুব ভালো ভাবে পড়বে ইহা আধুনিক বিজ্ঞানের আপেক্ষিক গুরুত্ব, বইটা খুব কঠিন। তাই মনযোগ দিয়ে ভালোভাবে পড়ে আসবে। মাওলানা সাহেব এই বইটি নিয়েও পর দিন হাজির। দার্শনিক হতভম্ব এতো কঠিন একটি বই কিভাবে একদিনে পড়ে শেষ করা সম্ভব! দার্শনিক কয়েকটি কঠিন প্রশ্ন করে যথাযথা উত্তর পেয়ে বলেন-''যু ইলম খোদা কিছিকো তিরিশ বরছ মে দিতা; আওর কিছিকো তিরিশ দিন মে দিয়া"। কিছুদিন পর দার্শনিক শামছুল হুদা(র.)কে ডেকে বলেন, 'তুমি দেশে চলিয়া যাও, এখানকার বিদ্যা তোমার শেষ হইয়া গিয়াছে। দেশে গিয়া মানুষের সেবা কর। অতঃপর একরাত্রে স্বপ্নে রামপুর স্টেটের শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক আলেম ও বুজুর্গানে দ্বীন হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ(গুজরাটি)সাহেবের সাথে সাক্ষাতের নির্দেশ প্রাপ্ত হইলেন। আধ্যাত্মিক বিষয়ে গভীর আলোচনার পর মাওলানা সাহেব পাকিস্তানের লাহোরে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার জন্য 'মুন্সী ফাযিল ডিগ্রী'(ইংরেজি শিক্ষা বিষয়ক তখনকার ডিগ্রীর নাম)অর্জন করতে অরিয়েন্টাল কলেজে যান। সেখানেও একি ঘটনা ঘটে। কিছুদিন পর বাবার পত্র পেয়ে দেশে ফিরে আসলে কিছুদিনের মধ্যেই পিতার ইচ্ছায় তাঁকে নান্দাইলের পাঁচরুখী গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সাঈদা নাম্নী নামে সুদর্শনা ও সর্বগুণে গুণাণ্বিতা এক কন্যার সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইতে হয়। যদিও পরিবার সংসারে তার ধ্যান ছিলনা।তখন ছিল ইংরেজ আমল, জমিদাররা ছিল ইংরেজদের খুব বিশ্বস্থ, খাস লোক। জমিদাররা জমির ফসল,খাজনা আদায় করে ইংরেজদের হাতে উঠিয়ে দিত। জমিদাররা প্রায় সবাই ছিল হিন্দু। তারা মুসলমানদের উপর নানা প্রকার নির্যাতন করত। গরু জবাই করতে দিত না, জুতা পায়ে কিংবা ছাতা মাথায় তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যেতে দিত না। মুসলমানরা মুখে দাড়ি রাখলেও ট্যাক্স দিতে হত। মুসলমানদের সব কিছুকেই করা হত অপমান অপদস্থ। মসজিদের সামনে ঢোল- ঢাগ পিঠিয়ে গানবাজনায় মেতে উঠত। মাওলানা সাহেব জমিদারদের বিরুদ্ধে মনে মনে জ্বলে উঠতে লাগলেন। গরু জবাই করার অপরাধে বাঘেরগাঁওয়ের সাহেব আলী মুন্সী ও ছিপান গ্রামের জনৈক এক ব্যক্তিকে জমিদাররা যথাক্রমে ৫০০ টাকা ও ৫০ টি বেত, ৭০০ টাকা ও ২০ টি বেত ধার্য করে। এদের একজনকে ৭০০ টাকা দিতে গিয়ে নিজের বাড়ি ভিটা টুকু বিক্রি করতে হয়েছিল। ব্রিটিশ আমলে ৭০০ টাকা মানে অনেক কিছু! মাওলানা সাহেব এগুলো সহ্য করতে পারলেন না, প্রতিবাদ ও আন্দোলনে জড়িয়ে পড়লেন এর ফলেই ৫৫০ টিরও বেশি মামলার আসামী হতে হয়েছিল তাঁকে। জমিদাররা মাওলানা সাহেবকে হত্যারও চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল। মাওলানা সাহেবের বিরুদ্ধে প্রায় ৭৫০ জন ছোট বড় জমিদার মিলে গঠন করে ল্যান্ড লর্ড এসোসিয়েশন এবং মাওলানা সাহেব কে জমিদার হওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। মাওলানা সাহেব বলেন আমি জমিদারি পাওয়ার উদ্দেশ্যে নয় বরং তা উচ্ছেদের উদ্দেশ্যেই আমার লড়াই। অতপর জমিদাররা মিলে যে মামলা করেছিল তা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধারা বর্ণনার মামলা, সেই সময়ে মামলাটি তৈরি করতে ১২০০ টাকার কাটির্স কাগজই লেগেছিল। ১৯৩৭ সালে মুসলিম লীগের জাঁদরেল নেতা মৌ. তমিজ উদ্দীনকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে পাক ভারত উপমহাদেশের সর্বপ্রথম আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন মাওলানা সাহেব । ১৯৩৭ সালে দিল্লির সংসদ সদস্য (এম.এল.এ.) নির্বাচিত হন।তৎকালীনন চলমান রাজনীতির সাথে নিজের মত ও পথের পার্থক্য দেখে ১৯৩৮ সনে 'ইমারত পার্টি' গঠন করেন। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আর সা.সম্পাদক ছিলেন সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মৌলভী আব্দুল ওহাব।
সে সময় মুসলমানরা মাছ বিক্রি,চুল কাটা একাজ গুলো করতো না। গরিব মানুষের না খেয়ে থাকার চেয়ে চুল কাটা, জুতা পালিশের কাজ কারও উত্তম। মাওলানা সাহেব নিজে বাজারে কাঁচি চিরণী নিয়ে নিজে চুল কাটতেন, মাছের ডালা নিয়ে বসে যেতেন, মাঝি ও মুচির কাজও নিজ হাতে করে মানুষকে উৎসাহিত করেন। এরপর থেকে মানুষ একাজ গুলোকে আর ঘৃণার চোখে নেয়নি। মাওলানা সাহেব ধর্মের কুসংস্কার থেকে বেড়িয়ে আসতে হাতে কলমে শিক্ষা দিয়েছেন। মাওলানা সাহেব ছিলেন ছিলেন খুব সাদাসিধে লুঙ্গি পাঞ্জাবি পরেই তিনি দিল্লির সংসদে যেতেন।একবার আলোচনা হয় এমন জায়গায় কেউ লুঙ্গি পরে আসে? মাওলানা সাহেব বলেন, 'যাদের ভোটে আমি সংসদ সদস্য হয়েছি সে মানুষ গুলোর গায়ে ছেড়া লুঙ্গি গেঞ্জি ছাড়া কিছুই দেখতে পাইনা' তিনি ছিলেন জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের মহানায়ক, কলকাতার সাথে আরও অনেক গুলো এলাকা নিয়ে তিনি স্বাধীন বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতেন এবং আন্দোলন করেছেন।কিন্তু ইতিহাসে আজও উনার নাম উঠে নাই,নাম উঠেছে যারা পাকিস্তান সৃষ্টির লক্ষে ব্যস্ত ও মরিয়া হয়ে উঠেছিল। মাওলানা সাহেবের বাড়িতে ছাপাখানা ছিল।বাংলা, উর্দু, আরবী ও ইংরেজি পত্রিকা এবং প্রতিবাদী বিজ্ঞাপন এখান থেকেই ছাপাতেন। উনার পার্টির হেড অফিস পাঁচবাগেই ছিল।
মাওলানা শামছুল হুদা পাঁচবাগী (র.) বাঙালি মুসলিম মহাজগরণের পুরোধা জাতি,ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সকল জনগনের মুক্তির জন্য আজীবন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তিনি অত্যাচারী হিন্দু জমিদার,বৃটিশ ও পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম বেগবান করার জন্য, তাঁর আহবান মুক্তিকামী মানুষের কাছে পৌঁছাতে অজপাড়াগাঁ পাচঁবাগ গ্রামে ‘শামছি’ প্রেস নামে একটি প্রেস স্থাপন করেন। ময়মনসিংহ শহরে মৃতঞ্জয় রোডে'ফারুকী' প্রেস নামে আরো একটি প্রেস স্থাপন করেন। উক্ত প্রেস হতে প্রচারপত্র-লিফলেট, হ্যান্ডবিল ও ইস্তেহারের মাধ্যমে বৃটিশ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন পরিচালনা করতেন। তিনি আরবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষায় ১০,০০০ এর বেশি প্রচারপত্র ছাপিয়ে ছিলেন। তিনি প্রচারপত্রে পাকিস্তান সৃষ্টির প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। এছাড়াও তিনি অবিভক্ত স্বাধীন বাংলার সমর্থক ছিলেন । তাঁর রেখে যাওয়া মুদ্রনযন্ত্রটি জাদুঘরে রাখার জন্য লড়াই করে জয়ী হলাম আর এর পূরো দাবিদার পূরাকৃর্তি সংরক্ষণ কমিটির । পরিশেষে বলতে চাই তাঁর মতো মেধাবী আধ্যাত্মিক রাজনীতিবীদ বর্তমানে নেই বললে চলে । মাওলানা সাহেব পুরো জীবনে ১০২১ টি মামলার আসামী হয়েছেন কিন্তু কোনো মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে জেল খাটাতে পারেনি। তাঁর রেখে যাওয়া মুদ্রণ যন্ত্রটি অবশেষে ময়মনসিংহ জাদুঘরে আসীন হওয়ায় তাঁর ভক্তরা গর্বিত। পাচঁভাগ মৌলানা সম্পর্কে এবং তারঁ কর্মকান্ড সম্পর্কে সম্যাক জ্ঞান আহরণ করবেন এটাই সকলের প্রত্যাশা ।
সম্পাদক
সাপ্তাহিক চরকা
0 Comments